প্রকাশিত: ২৪/১১/২০১৬ ৭:৫৭ এএম

নিজস্ব প্রতিবেদক :

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিধন, নারী ও শিশু ধর্ষণ, বাড়িতে অগ্নিসংযোগ এবং বিতাড়নের ঘটনায় চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশে বসবাসকারী শরণার্থী রোহিঙ্গা নেতারা। তারা অবিলম্বে রোহিঙ্গাদের ওপর চালিত গণহত্যা বন্ধে বিশ্বের সব মানুষের ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা প্রত্যাশা করছেন।rohinga2

বুধবার রাতে এক বিবৃতিতে আরাকানি রোহিঙ্গা শরণার্থী কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মাস্টার আব্দুর রহিম ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ এক বিবৃতিতে বলেন, রোহিঙ্গারা এখনো একটি নেতৃত্বহীন জাতি। বাংলাদেশ সরকার চাইলে রোহিঙ্গা জাতির মুক্তি ও অধিকার আদায়ের প্রশ্নে বিশ্বব্যাপী নেতৃত্বের ভূমিকা নিতে পারে।

তারা আরো বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে তৎকালীন বার্মা সরকারের বিরোধিতা সত্ত্বেও আমরা বাঙালি জাতির পাশে থেকেছি। বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্বের প্রথম রাষ্ট্রনায়ক যিনি আমাদের হয়ে তৎকালীন বার্মা সরকারকে চরমপত্র দিয়ে উৎখাতচেষ্টা বন্ধ করেছিলেন। বার্মা সরকারের কাছ থেকে রোহিঙ্গাদের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগও নিয়েছিলেন তিনি। আমরা বিশ্বাস করি, বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে রোহিঙ্গা জাতির আজকের এই দুর্দশার ইতিহাস রচিত হতো না।

আমরা এখনো বিশ্বাস করতে চাই বঙ্গবন্ধু কন্যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তার পিতার পথ ধরে রোহিঙ্গাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দেবেন এবং মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে এ ব্যাপারে দ্রুত কূটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।’

রোহিঙ্গা কল্যাণ পরিষদের নেতারা বলেন, ‘সীমান্ত খুলে দেওয়াই সমাধান নয়। এই মুহূর্তে আরাকান রাজ্যে সংঘঠিত ভয়াবহ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বন্ধের উদ্যোগ নিতে হবে জাতিসংঘকে। একই সঙ্গে সন্ত্রাস উপদ্রুত এলাকায় ত্রাণ পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। আরাকানে কী ঘটছে, তা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরার জন্য সেখানে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের কর্মকাণ্ড নির্বিঘ্ন করারও উদ্যোগ নিতে হবে বিশ্বকে।’

বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যম ও আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে পাওয়া খবরের বরাত দিয়ে রোহিঙ্গা নেতারা বলেন, এ পর্যন্ত তিন শতাধিক রোহিঙ্গা নারী-পুরুষকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। একই সঙ্গে ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে অগণিত নারী ও শিশু। হাজার হাজার বাড়িঘর পুড়িয়ে দিচ্ছে, চলছে লুটতরাজ। ফলে সেখানে দেখা দিয়েছে তীব্র খাদ্য সংকট। প্রাণ বাঁচাতে আমাদের মতো তারাও বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে পালিয়ে আসছে। কেউ কেউ আশ্রয় নিয়েছে আরাকানের গহীন পাহাড়ে। সীমান্ত থেকে দূরবর্তী রোহিঙ্গারা নৌকায় করে অনিশ্চিৎ যাত্রা করছে বঙ্গোপসাগরে। আরাকানে বিরাজ করছে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়।’

রোহিঙ্গা নেতারা বলেন, ‘আরাকানে শান্তি প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের জাতিগত ও নাগরিক অধিকারসহ আমাদের মাতৃভূমিতে ফিরে গিয়ে দুঃখময় শরণার্থী জীবনের অবসান চাই। এজন্য বিশ্বের সকল মানবিক শক্তির ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ কামনা করছি।’

 

পাঠকের মতামত

মিয়ানমারে প্রতিনিধি দল পাঠাবে বাংলাদেশ-মালয়েশিয়াসহ ৫ দেশ

মিয়ানমারে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য জরুরি মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ...

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে ট্রাকের ধাক্কায় নিহত ১

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের সাতকানিয়ার ঠাকুরদিঘি এলাকায় লবণবাহী ট্রাকের ধাক্কায় এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। নিহতের নাম ...

জাসদ কার্যালয়ের জায়গায় ‘শহীদ আবু সাঈদ জামে মসজিদ’ নির্মাণের ঘোষণা

বগুড়া শহরের জিরো পয়েন্ট সাতমাথা সংলগ্ন এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতে ভেঙ্গে ফেলা জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ-ইনু) ...

বাড়ছে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ, আটক ৩৩

বান্দরবানের আলীকদম সীমান্তে বাড়ছে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সংখ্যা। আজও বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকালে শিশুসহ ৩৩ মিয়ানমারের নাগরিককে আটক ...